29 C
Dhaka
Saturday, February 22, 2025

‘আমাদের বাসা থেকে কেউ ঈদগাহে গেল না’

কলকাতায় চিকিৎসার জন্য গিয়ে হত্যার শিকার হয়েছেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। তার মৃত্যুতে ঈদের দিন সকালে বাবাকে নিয়ে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। এ সময় তিনি চোখে পানি অবস্থায় দুটি ছবিও পোস্ট করেন।

সোমবার (১৭ জুন) সকালে নিজের ফেসবুক ভেরিফাইড আইডিতে এ পোস্ট দেন তিনি।

ওই পোস্টে আনারকন্যা লিখেন, ‘কে দেখবে আমার কান্না আব্বু? মাঠে ঈদের নামাজ পড়াচ্ছে, আব্বু তুমিতো ভোরে সবার আগে উঠে ঈদগাহতে যাও আব্বু। আজ তুমি নেই আব্বু। তুমি কি জানো, আব্বু সবাই দাড়িয়ে কাঁদছে। আমি ঘুমাতে পারছি না আব্বু। তুমি নেই, আজ কেউ আর আমাদের বাসা থেকে বের হয়ে ঈদগাহে গেল না।’

আরও পড়ুনঃ  অসুস্থ আবু সাঈদের বাবা, হেলিকপ্টারে আনা হলো ঢাকায়

নিজে ভালো নেই জানিয়ে তিনি আরও লিখেন, ‘আব্বু আজ আমার জীবনে প্রথম তোমাকে ছাড়া ঈদের দিন। আল্লাহ তুমি এমনটা কেন করলে? আমারতো কষ্ট হচ্ছে। সবাই ঈদের নামাজ পড়তে যায়, কিন্তু আমার বাবা যায় না। আমার তো শুধু চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। আমি ভালো নেই আব্বু তুমি তো জানো।’

‘কে দেখবে আমার কান্না আব্বু’ সম্প্রতি আরেক ফেসবুক পোস্টে তিনি বাবা হত্যার বিচারের আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘তোমার হত্যার বিচার আমি করবোই বাবা ইনশাআল্লাহ। চিন্তা করো না তুমি। তোমার ডরিন ভুলে যাবে না কোনদিনও। এতো নিকৃষ্টভাবে হত্যা তোমাকে কষ্ট দিয়েছে বিচার হবেই বাবা আমি ভুলবো না কখনোই। আমি এর শেষ দেখবো বাবা। আমার দীর্ঘশ্বাস আর চোখের পানি উপরে একজন দেখেছেন। বিচার আমি করবোই বাবা। আল্লাহ ভরসা।’

আরও পড়ুনঃ  ৫০ কিমি সাইকেলে করে আজহারীর মাহফিলে তিনজন

গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান এমপি আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মালপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ ছিলেন আনোয়ারুল আজিম।

২২ মে হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পার্শ্ববর্তী নিউটাউন এলাকায় বহুতল সঞ্জিভা গার্ডেনস নামে একটি আবাসিক ভবনের বি-ইউ ৫৬ নম্বর রুমে খুন হয়েছেন এমপি আনার। এ ঘটনার পর ঢাকায় অপহরণ মামলা ও কলকাতায় হত্যা মামলা হয়েছে। ঢাকায় প্রথমে শিমুল ভূঁইয়া, তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমান গ্রেপ্তার হন। তারা তিনজনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাদের তথ্যে গ্রেপ্তার হন কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবু। তিনিও গতকাল ঘটনার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার বিষয়টি স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ  যুবলীগ নেতার ‘হাত ভেঙে দিলেন’ যুবদল কর্মী

এদিকে কলকাতা সিআইডি মুম্বাই থেকে গ্রেপ্তার করেছে জিহাদ হাওলাদারকে আর নেপাল থেকে সিয়ামকে। এমপি আনার হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও এমপির বন্ধু আক্তারুজ্জামান শাহীনের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ পেয়েছেন ঢাকা ডিবি ও কলকাতা সিআইডির কর্মকর্তারা। তিনি এমপি আনার হত্যার পর দেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়েছেন। তাকে ফিরিয়ে আনতে ভারত ও বাংলাদেশ একযোগে কাজ করছে।

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ