22 C
Dhaka
Wednesday, February 19, 2025

অধ্যক্ষের চেয়ারে বরখাস্ত হওয়া উপাধ্যক্ষ, টেনে নামালেন শিক্ষকরা

কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের উপাধ্যক্ষ (সাময়িক বরখাস্ত) সাবিনা ইয়াছমিনকে হেনস্তা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। গতকাল বুধবার (১৪ আগস্ট) দুপুরের দিকে ইসলামিয়া কলেজের অধ্যক্ষের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী সাবিনা ইয়াসমিন।

কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া উপাধ্যক্ষ সাবিনা ইয়াছমিনকে স্বপদে পুনর্বহালের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক নির্দেশনা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) কর্তৃক বারবার অনুরোধ জানানো হলেও দীর্ঘ দিন বিষয়টি আমলে নেয়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ। বুধবার সাবিনা ইয়াসমিন তার দায়িত্ব বুঝে নিতে গেলে হেনস্তা ও মারধরের শিকার হন।

বর্তমানে কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মো. হাবিবুল ইসলাম এবং ভারপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষের পদে আছেন আতাহার আলী। তাদের দুজনের নেতৃত্বে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক নাসির, গভর্নিং বডির সদস্য সিরাজুল হকসহ বেশ কয়েকজন সাবিনা ইয়াসমিনকে মারধর ও হেনস্তা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  রায় জালিয়াতি করে নির্বাচন ব্যবস্থা সংকটে ফেলার কারিগর যিনি

সাবিনা ইয়াছমিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাকে যড়যন্ত্র করে বরখাস্ত করা হয়েছিল। ষড়যন্ত্র করে বেশ কয়েকটি মামলা করা হয়েছিল আমার বিরুদ্ধে। কোনো জায়গাতেই আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও মাউশি আমাকে স্বপদে পুনর্বহালের আদেশ দিয়েছে বারবার। কিন্তু বিষয়টি আমলে নেয় না কলেজ কর্তৃপক্ষ। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে আমি আদালতের আদেশের কাগজপত্র, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও মাউশির কাগজপত্র নিয়ে কলেজে গিয়েছিলাম। এ সময় তারা আমাকে মারধর করে ও নানাভাবে হেনস্তা করে। এ সময় ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক ইমদাদুল ইসলাম ও অফিসের পিয়ন জানিমুল ইসলামকেও মারধর করা হয়। আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

জানা গেছে, কলেজটির উপাধ্যক্ষ সাবিনা ইয়াছমিনকে ২০১৪ সালে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্তের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, সাবিনা ইয়াছমিনের নিয়োগ বৈধ নয়। অতঃপর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের অনুরোধক্রমে তাকে ২০১৬ সালে স্বপদে পুনর্বহাল করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। ২০১৯ সালে তাকে পুনরায় বরখাস্ত করা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও মাউশি তাকে স্বপদে পুনর্বহালের আদেশ দিয়েছে বারবার। কিন্তু এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি কলেজ কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুনঃ  ইট বৃষ্টির মধ্যেই সংঘর্ষ থামাতে দৌড়ালেন নারী ইউএনও

বিজ্ঞাপন

অভিযোগ অস্বীকার করে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. হাবিবুল ইসলাম বলেছেন, সাবিনা ইয়াসমিন সাময়িক বরখাস্ত অবস্থায় আছেন। তার রিরুদ্ধে করা কর্তৃপক্ষের রিট সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। এছাড়াও কুষ্টিয়া আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এমতাবস্থায় বুধবার তিনি কলেজে এসে আমাকে চেয়ার থেকে উঠিয়ে দেন এবং জোরপূর্বক আমার চেয়ারে বসেন। গভর্নিং বডির অনুমতি ছাড়াই তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। তিনি বরখাস্ত উপাধ্যক্ষ হয়ে অধ্যক্ষের চেয়ার দখল করার চেষ্টা করেন। নিয়ম অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হলে তাকে চেয়ার ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তিনি গায়ের জোরে চেয়ারে বসেছেন। এ সময় তাকে চেয়ার থেকে নামিয়ে দিয়েছেন কলেজের শিক্ষকরা। আমরা তার স্থায়ী বহিষ্কার ও শাস্তি চাই। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

আরও পড়ুনঃ  শেখ হাসিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, অভিজ্ঞতা বিবেচনা করেই কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাকে নিয়োগ দিয়েছে। আমার অভিজ্ঞতা আছে। আমার সকল কাগজপত্র ঠিক আছে। আমাকে হয়রানি করার জন্য কলেজই একাধিক মামলা করেছে। সবগুলো মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা। একটি মামলাতেও অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী আমাকে স্বপদে পুনর্বহাল করা হোক। আমার সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে।

এ বিষয়য়ে কথা বলার জন্য কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী ও কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ও‌সি) মাহফুজুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ