24 C
Dhaka
Tuesday, February 18, 2025

আমার দুই পায়ে গুলির পর দুই হাতের আঙুল কেটে দেন তারা

আমি বোয়ালখালী উপজেলায় মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে ছিলাম। সেখানে রাউজান থানার উপ-পরিদর্শক টুটন মজুমদার কয়েকজন পুলিশ সদস্য নিয়ে হাজির হন। তাদের সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন সন্ত্রাসী। রাত ১২টার পর তারা আমাকে গ্রামের দুই কিলোমিটার দূরের সূর্যসেন পল্লি এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে আমার দুই পায়ে গুলির পর দুই হাতের কয়েকটি আঙুল কেটে দেন তারা।’

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিমের নির্দেশে পুলিশ ও সন্ত্রাসী বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হওয়ার এবং মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ এনে এসব কথা বলেন চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের পলোয়ান পাড়ার বাসিন্দা কামরুল হাসান। নিজ গ্রামের একটি মাঠে এই সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ  ‘তোরা সমন্বয়ক’ বলে শিক্ষার্থীদের মেসে ঢুকে স্থানীয়দের হামলা, আহত ৮

ঘর থেকে একটি হুইলচেয়ারে করে সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেন কামরুল হাসান। তার একটি পা নেই। একটি হাতের কনিষ্ঠ আঙুল পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন।

কামরুল হাসান বলেন, কেবল বিএনপির কর্মী হওয়ার কারণেই নির্যাতন করে আমার জীবনকে বিপন্ন করে তোলা হয়েছে এবং আমাকে একাধিক মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিমের নির্দেশে এসব নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে পুলিশের উপ-পরিদর্শক টুটন মজুমদার ছাড়াও জড়িত ছিলেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ বাবুল মিয়া।

তিনি বলেন, ২০১৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি আমার পায়ে গুলি করা হয়। পরদিন পুলিশ ঘটনাটিকে বন্দুকযুদ্ধ দাবি করে আমাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলে পাঠায়। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আমার চারটি আঙুল প্রায় বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। যদিও তিনটি আঙুল পরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জোড়া লাগানো হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে জবি ছাত্রীর আত্মহত্যা সাবরিনা রহমান শাম্মি

তিনি আরও বলেন, গুলি এবং ধারালো অস্ত্রের জখমের পর পুলিশ দাবি করে আমার কাছ থেকে একটি দেশীয় বন্দুক ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়েছে। ওই সময় আমার একটি পা সম্পূর্ণ কেটে ফেলতে হয়। অপর পা এখনো নিয়মিত ড্রেসিং করতে হচ্ছে। ওই পা দিয়ে পুঁজ পড়ে।

কামরুল আরও বলেন, ‘২০১৫ সাল থেকে একটি পা বিচ্ছিন্ন। অন্যটিও পঙ্গু। এরপরও ২০২২ সালের ১৬ আগস্ট আমাকে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর ভাড়া বাসা থেকে তুলে নিয়ে অস্ত্র দিয়ে আরেকটি মামলায় ফাঁসানো হয়। আবারও জেলে যেতে হয়েছে। শুধু তা–ই নয়, আমাকে রাঙামাটির কাউখালী থানার একটি চাঁদাবাজি মামলায়ও আসামিও করা হয়।’

আরও পড়ুনঃ  মংলা বন্দরে ভীড়ল পাকিস্তানি জাহাজ, বাজল বিয়ের সানাই!

অভিযুক্তদের মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মুহাম্মদ বাবুল মিয়া গত ৫ আগস্ট থেকে আত্মগোপনে। তার মুঠোফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি।

অভিযুক্ত পুলিশের উপপরিদর্শক টুটন মজুমদার জানান, দুটি মামলায় পরোয়ানা থাকায় কামরুলকে বোয়ালখালী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে গেলে কামরুলের সহযোগীদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। নির্যাতনের অভিযোগ সত্য নয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- কামরুলের স্ত্রী পারভিন আকতার, মেয়ে রুনা আকতার, রেশমি আকতার, সানজিয়া হাসান ও কয়েকজন গ্রামবাসী।

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ