22 C
Dhaka
Thursday, February 20, 2025

আমার এক সন্তান শহীদ : ড. মাসুদ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারী ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, আপনারা শুধু আমার নির্যাতনের কথা জানেন, আমার অহংকার সোয়াব যেন নষ্ট না হয়। আজ প্রথম মিডিয়ার সামনে এটি প্রকাশ করছি। আমার পরিবার ছাড়া এ কথা কেউ জানে না। আমার এক সন্তান শহীদ।

শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ আয়োজিত মুফতি মুহাম্মাদ ওয়াক্কাস রহ. স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ড. মাসুদ বলেন, ‘আমার স্ত্রী যখন সন্তান সম্ভবা, তার বাবা আমার শ্বশুর তখন কেরানিগঞ্জের জেলখানায় দেখা করতে গিয়েছেন, তৎকালীন র‌্যাবের সদস্যরা তাকে গ্রেপ্তার করে গাড়িতে উঠিয়েছেন। অন্যায়ভাবে গাড়ি চালিয়েছেন এবং যখন বলেছে দেখুন আমার শরীর খারাপ, বলছে তোমার স্বামীর সঙ্গে তোমার দেখা নাই, তোমার শরীর খারাপ হয় কী করে? এই নির্যাতনের নির্মম কন্টাক্ট পথ পাড়ি দিয়ে আমরা আজ এখানে এসেছি।’

আরও পড়ুনঃ  ভারতে বড় দায়িত্ব পেলেন ছাত্রদের বিপক্ষে থাকা ‘আলো আসবেই’ গ্রুপের সোহানা সাবা

তিনি বলেন, ‘তারপরে বললো দেখেন আমাকে যদি আমার জন্য আমার কোনো অন্যায় থাকে তাহলে আমাকে গ্রেপ্তার করেন। র‌্যাব ওয়ানে তাকে নিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ কথাটা বলে শেষ করছি এজন্য, তারপরও তাকে ছাড়া হলো না, আমার আড়াই বছরের আরেক টা বাচ্চা তখন বাড়িতে অবস্থান করছে। আমার বৃদ্ধা মা ৯০ বছরের তাকে নিয়ে র‌্যাব ওয়ানে নিয়ে গেলো এক সাংবাদিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। বলা হলো আপনার সন্তানকে নিয়ে আসুন, তারপর তার স্ত্রীকে আপনার বউ মাকে আপনি নিয়ে যান।‘

নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে শিগগিরই সার্চ কমিটি: মাহফুজ আলম

তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্ত্রীকে নিয়ে আসা হলো কোনো ভাবে। এর কয়েকদিন পরে ডা. বললো তাকে অপারেশন করতে হবে। সন্তান জন্ম হলো, এটা কান্নার বিষয় নয়, চোখের পানি ফেলার বিষয় নয়। আমার সন্তান জন্ম হলো, আমাকে খবর দেওয়া হলো, আমি আসার জন্য উদ্যোগও নিলাম। হসপিটাল কর্তৃপক্ষ থেকে আমাকে জানানো হলো, আপনি হসপিটালে আসতে পারবেন না, কারণ হসপিটালের সবদিকে সবাই ঘিরে ফেলেছে। আপনি আসলে আপনি বের হতে পারবেন না, আপনার সন্তান আপনার স্ত্রী কেউ বের হতে পারবেন না। সবাইকে শুদ্ধ নিয়ে যাবে, আমি বললাম আমি আসবো আমার সন্তানের মুখ দেখবো, ডা. বলেছে কতক্ষণ সে বাঁচবে আমি জানি না। এগুলো আলোচনা করতে করতেই আমার সন্তান পৃথিবী থেকে চলে গেলো।’

আরও পড়ুনঃ  বাস ও সিএনজি চালকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ, আহত ৫০

ড.মাসুদ বলেন, ‘জানাজার জন্য জানাজা নির্ধারিত হলো। হসপিটাল কর্তৃপক্ষ আমাকে জানালো আপনার সন্তানের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে একটু পর। আমার নেতৃবৃন্দকে আমি জানিয়েছি আমি যদি গ্রেপ্তার হতে হয়, ক্রসফায়ারে যেতে হয়, গুম হতে হয়, আমার সন্তানের জানাজায় আমি যেতে চাই। আমাকে জানানো হলো সংগঠনের সিদ্ধান্ত, তোমাকে সবর করতে হবে, তোমাকে এই মুহূর্তে আমরা প্রশাসনের মুখে ঢেলে দিতে চাই না।’

তিনি বলেন, ‘আমার সেই সন্তান খিলগাঁও কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। আমার শহীদ সন্তানের জন্য আপনাদের কাছে দোয়া চাই, এটার জন্য তার জন্য তো দোয়ার দরকার নাই। আমি বিশ্বাস করি নবজাতক হিসেবে আল্লাহ তায়ালা তাকে কবুল করেছেন। যেন আল্লাহ তায়ালা তার সঙ্গে আমাকে জান্নাতে দেখা করার ব্যবস্থা করিয়ে দেন। এই পথ মারিয়ে যেই বাংলাদেশ পেয়েছি, শুধু এই কথা বলেছি এই জন্য যে এই বাংলাদেশকে আর কোনো অবস্থায় বিপদের মুখে ফেলে দিতে পারি না। আমাদের নবজাতকরা শহীদ হয়েছে। আমাদের ভাইয়েরা শহীদ হয়েছেন, আমাদের বোনেরা শহীদ হয়েছেন, ছাত্র শ্রমিক যুবক শহীদ হয়েছেন, শহীদের এই বাংলাদেশে বিশ্বাস ঘাতকদের আর স্থান করতে হবে না।’

আরও পড়ুনঃ  ‘নাতির বয়সী ছেলের বিএনপি মহাসচিবকে খোঁচা দেওয়া দুঃখজনক’
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ