22 C
Dhaka
Wednesday, February 19, 2025

‘আন্দোলনে মরতে গিয়েছিলাম, উপদেষ্টা হওয়ার জন্য যাইনি’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎস। পরবর্তীতে রাজধানীর সেতু ভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বনানী থানার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সরকার পতনের পর গত ৬ আগস্ট জামিনে মুক্তি পান তিনি।

সাম্প্রতিক সময়ে উপদেষ্টা নিয়োগ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হলে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেন আফিস মাহতাব। এর প্রেক্ষিতে ‘আন্দোলনের মরতে গিয়েছিলাম, উপদেষ্টা হওয়ার জন্য যাইনি’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

আসিফ মাহতাব বলেন, সরকার গঠন করার পর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা, জনগণ, রাজনৈতিক দল কারো মতামত না নিয়ে উপদেষ্টা করা হচ্ছে স্বৈরাচারের দোসরদের। বলা হচ্ছে তারা ছাত্রদের দ্বারা নিয়োগ পেয়েছে। কিন্তু সেই ছাত্রদের মধ্যে কি আমাদের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতারা ছিল? আমি মনে করি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার প্রতি বৈষম্য করা হয়েছে এবং হচ্ছে। এর মাধ্যমে তাদের সর্বোচ্চ ত্যাগ এবং অবদান অস্বীকার করা হয়েছে এবং হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  ভেঙে ফেলা হলো ৭ মার্চ ভাষণের ভাস্কর্য

তিনি বলেন, সরকার গঠন করার পর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উপদেষ্টা করা হলো, অথচ তাদের থাকার কথা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু শিক্ষক হয়ে, আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে, এমনকি ত্যাগ শিকার করার পরও আমাকে একটা ফোন করার প্রয়োজন মনে করেনি সরকার। দেশ স্বাভাবিক করার জন্যও আমার থেকে কোনো পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন হয়নি, যেখানে আমি জনমুখী রাজনীতি এবং স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করেছি ১৫ বছর ধরে। আর এখন যারা উপদেষ্টা হচ্ছেন, তারা স্বৈরাচারের দালালি করায় ব্যস্ত ছিল।

আরও পড়ুনঃ  অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: আলোচনায় যারা নাম

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষক বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উপদেষ্টা যদি করতেই হয়, তাহলে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় কেন বাদ যাবে? বৈষম্যের কারণে? মার্কিন বুদ্ধিজীবী এবং রাজনৈতিক বিজ্ঞানী নোম চমস্কি একবার বলেছিলেন, এনজিওরা একটা ছোট স্বৈরাচারী রাষ্ট্রের মতো। তারা তাদের কর্মচারীরা কী কাপড় পরবে, কতক্ষণ ব্রেক পাবে, এমনকি অফিসের কালচারও নির্ধারণ করে দেয়। আমাদের এনজিওগ্রাম সরকার দেশটাকে সেভাবেই চালাচ্ছে এবং নিজেদের মনমতো উপদেষ্টা নিচ্ছে।

আসিফ মাহতাব বলেন, আমি এই সরকারের নিয়োগ নেব না। আমাকে যদি ছাত্র-জনতা নিয়োগ দিতে চায়, তাহলে আমি ছাত্র-জনতার নিয়োগপ্রাপ্ত হবো। সেটা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করবে জনগণের ওপর। তবে একটা জিনিস মাথায় রাখবেন, আমি আন্দোলনের সময় মরতে গিয়েছিলাম, উপদেষ্টা হওয়ার জন্য যাইনি। আপনারা কেউ যখন আমাকে চেনেন না, তখন থেকে আমি সংগ্রাম করে আসছি। কোনো কিছুই চেনাপরিচিতি পাওয়ার জন্য করিনি।

আরও পড়ুনঃ  আওয়ামী লীগ কর্মী থাকায় অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করলেন রিজভী

ছাত্র আন্দোলনে নিজের ত্যাগের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, যে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমন্বয়করা ডিবি অফিসে ছিলেন, সেই নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে আমিও ডিবি অফিসে ছিলাম। আমরা ঠিক একই সময়ে একই অফিসে ছিলাম। তবে শেষ পর্যন্ত আমি কারাগারের ভেতরে আর তারা বাইরে চলে এসেছিলেন। তখনও ডিবি আমাকে মারধর করে ইনিয়ে-বিনিয়ে বলেছিল যাতে আমি বের হয়ে আন্দোলনের বিপক্ষে বলি কিন্তু আমি রাজি হইনি। রাজি হলে হয়ত আগেই ছাড়া পেয়ে যেতাম।

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ