29 C
Dhaka
Saturday, February 22, 2025

মডেল হতে চেয়েছিলেন শিলাস্তি রহমান

এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যায় নাম আসা নারী শিলাস্তি রহমান চেয়েছিলেন মডেল হতে। কিন্তু পুরান ঢাকার এই তরুণী বিত্তশালী আক্তারুজ্জামান শাহীনের খপ্পরে চলে যান অন্ধকার জগতে। মার্কিন পাসপোর্টধারী শাহীন দেশে এলেই ঘুরে বেড়াতেন তার সঙ্গে। বিভিন্ন পার্টিতে অংশ নিতেন শাহীনের ফ্ল্যাটে।

কলকতায় এমপি আনার খুন হওয়ার পর মাস্টারমাইন্ড শাহীনের বান্ধবী হিসেবে নাম আসে এই শিলাস্তি রহমানের, যার আরেক নাম সেলে নিস্কি। তিনি এখন রয়েছেন গোয়েন্দা জালে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৩ মে কলকাতায় এমপি আনার খুন করার পর ১৫ মে ঢাকায় চলে আসেন প্রধান কিলার আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া। তার সঙ্গে একই ফ্লাইটে কলকাতা থেকে ঢাকায় ফেরেন শাহীনের বান্ধবী শিলাস্তি রহমান। বিমানবন্দর থেকে চলে যান বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় শাহীনের অভিজাত ফ্ল্যাটে। এমপিকে খুন করে সফল হওয়ায় ওই রাতেই শাহীন সেখানে ফুর্তি পার্টির আয়োজন করেন। সেখানে মনোরঞ্জন করেন এই শিলাস্তি ওরফে সেলে নিস্কি। এর আগে ৩০ এপ্রিল শাহীনের সঙ্গে গিয়েছিলেন কলকাতায়। ১০ মে শাহীন দেশে ফিরলেও শিলাস্তিকে রাখা হয় কলকাতাতেই।

আরও পড়ুনঃ  জনপ্রিয় অভিনেত্রীর অন্তরঙ্গ ছবি-ভিডিও ফাঁস

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেছেন, এমপি আনার খুনের সময়ে এই শিলাস্তি কলকাতায় শাহীনের ভাড়া ফ্ল্যাটে অবস্থান করছিলেন। তবে যে ফ্লোরে হত্যাকাণ্ড ঘটে, সেখানে তিনি ছিলেন না। পরে হত্যার বিষয়টি বুঝতে পারেন। এখন পর্যন্ত হত্যায় সরাসরি তার সম্পৃক্ততা মেলেনি।

ঢাকায় ফিরে শাহীনের ফ্ল্যাটে শিলাস্তির পার্টি
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শিলাস্তির গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুরে। তবে তিনি বড় হয়েছেন পুরান ঢাকায়। অবশ্য বিত্তশালীদের ডেরায় গিয়ে নিজেও এখন থাকেন উত্তরার অভিজাত ফ্ল্যাটে।

ওই সূত্র জানায়, এই শিলাস্তিকে দিয়েই এমপি আনারকে কলকাতা নেওয়ার ফাঁদ পাততে পারেন খুনের মাস্টারমাইন্ড শাহীন। হয়তো ওই হানি ট্র্যাপেই পা দিয়ে নিজের জীবন দিয়েছেন এমপি আনার। এসব বিষয় গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চললে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে অকাট্য তথ্য মেলেনি।

আরও পড়ুনঃ  খারাপ ভিডিও দেখিয়ে স্যার অফার দিয়েছিলেন: মিষ্টি জান্নাত

দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কোনো সংসদ সদস্য দেশের বাইরে গেলে জাতীয় সংসদ সচিবালয়কে তা অবহিত করার নিয়ম রয়েছে। তবে আনার এক্ষেত্রে তা হয়েছিল কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে। তাছাড়া কলকাতায় যে ফ্ল্যাটে খুন, সেখানেও তিনি স্বাভাবিকভাবে গিয়েছেন বলে এখন পর্যন্ত তথ্য রয়েছে। তার সঙ্গে গাড়িতে এক নারীও ছিল। সেই নারী শিলাস্তি কি না, তদন্ত চলছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ১৩ মে এমপি আনার যখন কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জীবনী গার্ডেনের ৫৬ বিইউ নম্বরের ট্রিপ্লেক্স ফ্ল্যাটে যান, তখন খুনিদের সঙ্গে শিলাস্তিও ছিলেন সেখানে। ভবনে প্রবেশ করে তিনি অবস্থান নেন তৃতীয় তলায়। নিচতলায় আনারকে হত্যা করা হয়। হত্যার কিছু সময় পর তার লাশ কয়েক খণ্ডে ভাগ করে ফেলা হয়। দুর্গন্ধ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য ঘাতকরা সেখানে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দেয়। এরপরই তৃতীয় তলা থেকে নিচে নেমে শিলাস্তি কিসের গন্ধ জানতে চান। তখন প্রধান কিলার আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া তাকে জানান, সেখানে একজন বমি করেছে, তাই ব্লিচিং পাউডার ছিটানো হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  হিরো আলমের নতুন সিনেমা নাম ‘আরাফাতের চার বউ’

সূত্র জানায়, এরপর সেদিন ওই ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে শিলাস্তি কলকাতার বিমানবন্দরের কাছে একটি হোটেলে অবস্থান করেন। এক দিন সেখানে অবস্থান করে ১৫ মে ফ্লাইটে আমানুল্লাহ ওরফে শিমুলের সঙ্গে ঢাকায় ফেরেন। ঢাকায় আসার পর শাহীনের ফ্ল্যাটে অবস্থান করেন। ১৬ মে তার সন্ধান পায় ডিবি পুলিশ।

ডিবি পুলিশের একজন কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, শিলাস্তিকে হয়তো আজকালের মধ্যেই আদালতে হাজির করে রিমান্ডে নেওয়া হতে পারে। তা ছাড়া তিনি ওই হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে মামলার সাক্ষীও হতে পারেন।

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ