গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে শনিবার চার সেনার বিনিময়ে ২০০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি দিয়েছে নেতানিয়াহুর দেশ। মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ১২১ জন ছিলেন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত। এদের মধ্যে ৭৯ জন দীর্ঘ মেয়াদের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত।
শনিবার মুক্তি পাওয়া বন্দিদের মধ্যে ৭০ জনকে মিশরে পাঠানো হয়েছে। এদেরকে তুর্কি ও অন্যান্য দেশে নির্বাসন দেয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া ১১৪ জনকে পশ্চিম তীরে ও মাত্র ১৬ জনকে গাজায় ফিরতে দিয়েছে ইসরায়েল।
শনিবার মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে দুই জন বিশিষ্ট ও বিখ্যাত ফিলিস্তিনি রয়েছেন। পার্স টুডে এদের পরিচয় তুলে ধরেছেন। এদের একজন মুহাম্মাদ আততুস এবং অপরজন রাআদ আস সাদি।
মুহাম্মাদ আততুস সবচেয়ে পুরনো ফিলিস্তিনি বন্দি, যিনি ৪০ বছর বন্দি থাকার পর ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। ১৯৮৫ সালে ইসরায়েলি সেনারা পশ্চিম তীরের বেথেলহাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। তখন থেকেই দখলদারদের কারাগারে বন্দি ছিলেন তিনি। ফলে ইসরায়েলি কারাগারে তিনিই সবচেয়ে পুরনো ফিলিস্তিনি বন্দি হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন।
রাআদ আস সাদি পশ্চিম তীরের জেনিন অঞ্চলের সবচেয়ে পুরনো বন্দি, যিনি ৩৬ বছর পর ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। প্রথম ফিলিস্তিনি ইন্তিফাদা বা গণঅভ্যুত্থানের সময় সংগ্রামী ভূমিকার কারণে দুই বছর ধরে ইসরায়েলের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আওতায় তাকে খুঁজছিল ইসরায়েলি পুলিশ।
দখলদার বাহিনী তার ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে সাদির বাবাকে বন্দি করে ও অসংখ্যবার তাদের পারিবারিক বাসভবনে হামলা চালায়। পরে ১৯৮৯ সালের আগস্ট মাসে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তাকে গ্রেপ্তার করে ইসরায়েলি পুলিশ। তাকে দুইটি যাবজ্জীবন ও আরও বিশ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। কারাগারে থাকা অবস্থায় মা, ভাই ও পিতাকে হারান সাদি। বন্দি অবস্থায় নির্যাতনের ফলে এবং একাধিক কারাগারে বদলি হওয়ার কারণে বিভিন্ন জটিল রোগের আক্রান্ত হন তিনি। পাশাপাশি কয়েকবার কারাগারের ভেতরেই অস্ত্রোপচারও করতে হয়েছে তার।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। এই যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায় ৪২ দিন স্থায়ী হবে ৩৩ জন ইসরাইলি বন্দিকে জীবিত বা মৃত মুক্তি দেয়ার বিনিময়ে এক হাজার ৭০০ থেকে দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি দেয়ার কথা রয়েছে।