ছেলে সন্তানের জন্ম দিলেন গুলিবিদ্ধ সেই নারী
মুন্সীগঞ্জের মেঘনা নদীতে গোলাগুলিতে দুইজন নিহতের ঘটনার জেরে ধরে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে বাড়িতে ঢুকে গুলিবর্ষণে আহত ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারী পিংকি আক্তার (১৯) ছেলে সন্তানের মা হয়েছেন। বর্তমানে মা ও ছেলে সুস্থ রয়েছেন।
গুলিবিদ্ধ নারীর ভাই দেওয়ান মো. শামীম বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে মুন্সীগঞ্জ আধুনিক হাসপাতালে আমার বোন একটি ছেলে সন্তান প্রসব করেছে। ছেলে এবং আমার বোন দু-জনই সুস্থ আছে বলেও জানান তিনি।
ওই নারীর স্বামী মো. সম্রাট জানান, শুক্রবার বিকেলে শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তার স্ত্রী।
আগে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আধারা ইউনিয়নের কালিরচর গ্রামে গুলিবিদ্ধ হন পিংকি আক্তার। তিনি ৯ মাসের অন্তসংত্ত্বা ছিলেন। শুক্রবারের আগেই তার ডেলিভারির তারিখ দিয়েছিলেন চিকিৎসক। কিন্তু ডেলিভারির তারিখের দিনেই তাকে গুলি করা হয়।
জানা গেছে, একাধিক ডাকাতি মামলার আসামি কিবরিয়া মিজি ও কানা জহিরের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার ও মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে।
আহত নারীর মা নুরজাহান বেগম অভিযোগ করে জানান, বৃহস্পতিবার মেঘনা নদীতে গোলাগুলিতে দুইজন নিহতের ঘটনার জের ধরে সকালে কিবরিয়া পক্ষের আমার ছেলে রাজু সরকারের বাড়িতে হামলা চালায় স্থানীয় কানা জহিরের ভাই শাহিন বেপারি ও তার লোকজন। এসময় অতর্কিত গুলিতে আহত হন আমার মেয়ে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা পিংকি।
আহত নারী পিংকি আক্তার বলেন, আমার ভাইয়ের সাথে ওদের ঝগড়া। আজ (শুক্রবার) তাকে ধাওয়া করে পেছন পেছন আসে শাহিন ও তার লোকজন। এসময় আমাকে দরজার সামনে পেয়ে গুলি করে দেয়। গুলিটি আমার ডান পাশের কোমড়ের নিচে পায়ে ঢুকে অপরদিক থেকে বের হয়ে যায়। এতে আমি ও আমার সদ্য ভূমিষ্ট সন্তান কোনো রকমে প্রাণে রক্ষা পাই।
গুলির অভিযোগ অস্বীকার করে জহির ইসলাম ওরফে কানা জহির বলেন, কিবরিয়া মিজির কাছ থেকে বালু ব্যবসার টাকা এনে এলাকায় ভাগবাটোয়ারা করছিল পিংকির বাবা শাহজাহান সরকার। এ নিয়ে এলাকায় বিতর্কের সৃষ্টি হলে নিজেরাই গুলির নাটক সাজিয়েছে।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম রাত পৌনে ১১টার দিকে ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ পিংকির স্বামী মো. সম্রাট বাদী হয়ে কানা জহির ও তার ভাইসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও সাত-আটজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। আসামি গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন এখনও কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি তবে চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাতে মেঘনা নদীতে মুন্সীগঞ্জ-চাঁদপুর সীমান্তে কিবরিয়া মিজি ও কানা জহির গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত হন মুন্সীগঞ্জ সদরের আধারা ইউনিয়নের ভাষানচর এলাকার কামাল ফকিরের ছেলে রাসেল ফকির (৩৩) ও চাঁদপুরের মতলব থানার তুহিন (২৯)।