30 C
Dhaka
Friday, February 21, 2025

১১ বছর পর তোলা হলো শিবিরকর্মীর মরদেহ, কবরে মিলল গুলি

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভায় আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিতে নিহত শিবিরকর্মীর মরদেহ ১১ বছর পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। এ সময় কবরের মাটির মধ্যে একটি গুলিও পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে বসুরহাট পৌরসভা ৬নং ওয়ার্ডের নয়ন হাজী বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান থেকে ২০১৩ সালে গুলিতে নিহত শিবিরকর্মী মতিউর রহমান সজিবের মরদেহ উত্তোলন করা হয়। মরদেহ উত্তোলনের সময় বিপুল সংখ্যক উৎসুক জনতা ঘটনাস্থলে ভিড় জমায়।

মরদেহ উত্তোলনের সময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাবেল উদ্দিন, কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম, হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) এসআই মঈনুল হোসেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যক্ষ বেলায়েত হোসেন, পৌরসভা আমির মাওলানা মোশাররফ হোসাইন, সেক্রেটারি মাওলানা হেলাল উদ্দিন ও নিহতের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুনঃ  দেশবাসীর প্রতি আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভায় জামায়াত-শিবিরের ৪ নেতাকর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় নিহত জামায়াত কর্মী সাইফুল ইসলামের বড় ভাই মো. আমিরুল ইসলাম বাদী হয়ে আদালতে মামলার জন্য আবেদন করেন। আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। পরে গত ২৬ সেপ্টেম্বর কোম্পানীগঞ্জ থানায় ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল কাদের মির্জা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল, সাবেক ইউএনও নুরুজ্জামান, তৎকালীন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম ও ১৯ পুলিশ সদস্যসহ ১১২ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা রেকর্ড করে। এরই প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্তের জন্য আদালত ওই চারজনের মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর মঙ্গলবার দুপুরে নিহত শিবিরকর্মী সজিবের মরদেহ উত্তোলন করা হয়। গুলিতে নিহত অপর ৩ জামায়াত-শিবির কর্মী সাইফুল ইসলাম, আবদুল আজিজ রায়হান ও সাইফুল ইসলাম বাবলুর মরদেহ পর্যায়ক্রমে কবর থেকে উত্তোলন করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

আরও পড়ুনঃ  জবিতে বোরকা পরে সনদ তুলতে এসে আটক ছাত্রলীগের নারী কর্মী

মামলার বাদী মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, আমি এবং আমার ভাই সাইফুল ইসলাম জামায়াতের সক্রিয় কর্মী। আমরা ঘটনার সময় দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণ করি। এতে কাদের মির্জার নেতৃত্বে তার সহযোগী ও প্রশাসনের গুলিতে আমার ভাইসহ চারজন ঘটনাস্থলে মারা যান। ঘটনার পর আমরা এ হত্যার বিচার চাইলেও আসামিদের প্রভাবশালী হওয়ায় কোনো বিচার পাইনি। এমনকি গত ১১ বছর ভুক্তভোগী নিহতদের পরিবারের লোকজন বাড়িঘরে থাকতে পারেনি। বর্তমানে স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর স্বাধীন বাংলাদেশে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।

আরও পড়ুনঃ  গাজায় ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও ৪২ ফিলিস্তিনির লাশ উদ্ধার

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাবেল উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশে শিবিরকর্মী মতিউর রহমান সজিবের মরদেহ উত্তোলন করা হয়। কবরের মাটির মধ্যে হাড়ের সঙ্গে একটি গুলিও পাওয়া যায়। ক্রমন্বয়ে অন্যদের মরদেহ উত্তোলন করা হবে।

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ