21 C
Dhaka
Wednesday, February 19, 2025

আমার একটা অ্যাকাউন্ট, সেখানে আছে ১১.৪ মিলিয়ন টাকা: প্রেস সচিব

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দেয়ার তাগিদ দিয়ে আসছে অন্তর্বর্তী সরকার। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রাখার লক্ষ্যে সম্পদ বিবরণী জমা দেয়ার জন্য সময়ও বেঁধে দেয়া হয়েছে। এবার সর্বসাধারণের জন্য নিজের আর্থিক অবস্থা তুলে ধরলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

সম্পদের বিবরণী নিজের ফেসবুক আইডিতে প্রকাশ করেছেন অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এক পোস্টে সেই বিবরণী লিখে প্রকাশ করেন তিনি।

“২০০০ সালের দিকে আমার বাবা ঢাকা শহরের নিম্নমধ্যবিত্ত এলাকা ডেমরার কাছে জুরাইন এবং যাত্রাবাড়ীর মধ্যবর্তী দনিয়া এলাকায় পাঁচতলা একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবন নির্মাণ করেন। সেই ভবনের একটি ১,১৫০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট আমি উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছি। ২০১০ সালে দনিয়া ছেড়ে চলে আসলেও এখনো সেই ফ্ল্যাট আমার মালিকানায় আছে। একসময় আমি সেটি আমার এক ভাইয়ের কাছে বিক্রি করার কথা ভেবেছিলাম, যিনি এখনো সেখানে থাকেন। তবে শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করি। জীবনের এক পর্যায়ে হয়তো আবার দনিয়ায় ফিরে যাব। বাবা-মায়ের বাড়িতে গেলে আমি এখনো সেই সরু করিডোরগুলোতে তাদের হাঁটতে দেখি। আমার প্রয়াত বাবার কোরআন তেলাওয়াতের শব্দ শুনি, মা যেভাবে বিনয়ের সঙ্গে সালাত আদায় করতেন তাও যেন দেখতে পাই।

আরও পড়ুনঃ  ট্রাম্পের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের আদেশ আটকে দিলো আদালত

২০১৪ সালে আমি শাহীনবাগে ১,১০০ বর্গফুটের একটি তিন বেডরুমের ফ্ল্যাট কিনেছিলাম। ভাই এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন কিছু টাকা দিয়েছিলেন, আর বাকিটা আমার সঞ্চয় থেকে দিয়েছিলাম। আমি জায়গাটি ভালোবাসি। তবে নিরাপত্তার কারণে হয়তো খুব শিগগিরই এই ফ্ল্যাট ছেড়ে যেতে হবে। সম্প্রতি দেখছি, আমাদের এলাকার মসজিদের ভিক্ষুকরাও আমাকে চেনেন। কিছুদিন আগে কয়েকজন তরুণ আমাকে তাদের আড্ডার সামনে দিয়ে হাঁটার সময় ‘গণশত্রু’ বলে ডেকেছিল। এ কারণে আমাকে হয়তো শিগগিরই সরকারি একটি ফ্ল্যাটে চলে যেতে হবে। আমার পরিবার এই নিয়ে গভীরভাবে চিন্তিত।

আরও পড়ুনঃ  ভারত থেকে অজ্ঞাত গন্তব্যে রওনা দিয়েছেন হাসিনার সহযোগীরা

প্রায় পাঁচ বছর আগে আমি আমার এক শ্যালকের কাছ থেকে ময়মনসিংহে একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলাম। খুব সস্তায় পেয়েছিলাম সেটি। একই ভবনে আমার স্ত্রী তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে একটি ফ্ল্যাট পেয়েছেন। এই দুটি ফ্ল্যাট আমাদের জন্য মাসিক আয়ের একটি উৎস। এছাড়া গ্রামে আমার ৪০ শতাংশ আবাদি জমি আছে। বহু বছর ধরে একটা ভ্রান্ত ধারণায় ভুগেছি যে, অবসরে গ্রামে ফিরে যাব। শুধু লিখব আর হাঁটব—এটাই ছিল পরিকল্পনা। কিন্তু এখন মনে হয়, গ্রামে আর কখনো ফিরে যাওয়া হবে না। হয়তো আমি মরে গেলে আমার সন্তানরা আমাকে বাবা-মায়ের পাশেই কবর দেবে।

বাংলাভিশনের গুগল নিউজ ফলো করতে ক্লিক করুন
আমার একটি মাত্র ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে যেখানে ১ কোটি ১৪ লাখ টাকা (১১.৪ মিলিয়ন টাকা) সঞ্চিত আছে। এই আগস্টে আমি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপিতে দুই দশকের চাকরি ছেড়েছি। অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থের বেশিরভাগই আমার এএফপির চাকরির পেনশন এবং গ্র্যাচুইটির। কিছু মানুষ আমার কাছ থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ধার নিয়েছে। আমার ধারণা, বছরের শেষে আমার সঞ্চয় হয় অপরিবর্তিত থাকবে, নয়তো খরচের কারণে কমে যাবে। আমার একটি গাড়ি আছে। ঢাকা শহরে একটি গাড়ি পরিচালনা এবং ড্রাইভার রাখার মাসিক খরচ প্রায় ৫০ হাজার টাকা।

আরও পড়ুনঃ  ধানমন্ডি ৩২ কি আজ জয় বাংলা হবে?

আমি জানি না, প্রেস সেক্রেটারি হিসেবে কাজ শেষ করার পর আমার ভাগ্য কোথায় নিয়ে যাবে। তবে নিশ্চিত জানি, এই সঞ্চিত অর্থ দিয়ে কোনো কাজ না পেলেও আমি মধ্যবিত্তের মতোই সাধারণ জীবনযাপন করতে পারব। ক্ষমতায় থাকলে অনেকেই আপনার উপার্জন নিয়ে মিথ্যা রটায়। এটাই আমার পূর্ণাঙ্গ সম্পত্তির প্রকাশ।

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ