29 C
Dhaka
Wednesday, February 19, 2025

রূপগঞ্জে আড়ত দখল নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ২জন

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে প্রভাব বিস্তার ও আড়ত দখলকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া, গোলাগুলি, অগ্নিসংযোগ ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে রাফি আহমেদ স্বপন ও রাজু ভুইয়া নামের দুজন গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের সাওঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহসড়ক সংলগ্ন সাওঘাট এলাকায় বিসমিল্লাহ আড়ত নিয়ে ক্যাসিনো সম্রাট ডন সেলিম প্রধানের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ী মুজিবর রহমানের আড়ত নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।

ব্যবসায়ী মজিবুর রহমানের দাবি, সেলিম প্রধানের মালিকানাধীন জমি তিনি ১০ বছরের জন্য চুক্তি ভিত্তিতে ভাড়া নেন। পরে সেখানে বালু ভরাট ও শেড নির্মাণ করে কাঁচাবাজারের আড়ত গড়ে তোলেন। বর্তমানে পেশিশক্তি খাটিয়ে আড়তটি বেদখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন সেলিম প্রধান।

আরও পড়ুনঃ  জাতি গঠনের এমন সুযোগ নষ্ট হলে দেশ অনেক পিছিয়ে যাবে : ড. ইউনূস

অন্যদিকে সেলিম প্রধানের দাবি, ভুয়া চুক্তিনামা তৈরি করে জোর করে জমি দখল করে আড়ত গড়ে তোলেন মজিবুর রহমান। এদিকে আড়তটি দখল করতে সেলিম প্রধানের পক্ষ নেয় মাসুদুর রহমান ও তার লোকজন। অন্যদিকে মজিবুর রহমান ও আড়তের ব্যবসায়ীদের পক্ষ নেয় রফিকুল ইসলাম ও তার লোকজন।

মঙ্গলবার দুপুরে আড়তের পাশে সেলিম প্রধানের বাড়িতে মাসুদুর রহমানের লোকজন অবস্থান নেয়।

এ সময় আড়তের পাশের সড়ক দিয়ে রফিকুল ইসলাম তার লোকজনদের নিয়ে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসবিরোধী মিছিল বের করে। এ সময় সেলিম প্রধানের বাড়ির ভেতর থেকে ওই মিছিলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয় এবং মিছিলের ওপর হামলা চালায়। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের লোকজন ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, গুলিবর্ষণ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় সেলিমের কয়েকজনকে পিস্তল হাতে গুলি করতে দেখা গেছে।

আরও পড়ুনঃ  নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হামলায় ছাত্রশিবিরের ৩ কর্মী আহত

সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। আহতের মধ্যে রাজু ও স্বপন নামের দুজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তা ছাড়া একটি জিপ গাড়ি ও ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর চালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় গাউছিয়া মার্কেট তাঁতবাজার, হাজী শপিং কমপ্লেক্সসহ আশপাশের মার্কেট ও হাঁটবাজারের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। জনমনে চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। পরে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসবিরোধী মিছিল করছিলাম। ওই মিছিলে ডন সেলিমের সন্ত্রাসীরা অতর্কিতভাবে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, গুলি ও হামলা করে।’

আরও পড়ুনঃ  কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে টিস্যু পেপারে ‘চিঠি’ লিখলেন দীপু মনি

মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। তবে শুনেছি, আমার লোকজনের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে। গুলিবিদ্ধসহ অনেকে আহত হয়েছে।’

এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মেহেদী ইসলাম বলেন, ‘সেলিম প্রধানের সঙ্গে মুজিবুর রহমানের বিসমিল্লাহ আড়ত নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। যেহেতু এখানে গুলিবষর্ণের ঘটনা ঘটেছে আমরা অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চালাব। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আড়তের আসল মালিক কে এর জন্য আমরা উচ্চ আদালতের দারস্থ হবো।

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ