27 C
Dhaka
Thursday, February 20, 2025

ছাত্র আন্দোলনের নেতাসহ ২ শিক্ষার্থীর ওপর হামলা

নওগাঁয় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আরমান হোসেনসহ (২২) দুই শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শহরের বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এঘটনায় ওই দিন রাত সাড়ে ৮টায় দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাং এর তিন সদস্যকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি অপারেশন) আব্দুল আজিজ।

আহত আরমান হোসেন ঢাকা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী। বর্তমানে ২৫০ শয্যা নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে নওগাঁয় অবস্থান করছিলেন ছাত্রনেতা আরমান। আরেকজন মেহেদী হাসান (২২) নওগাঁ সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী।

প্রত্যক্ষদর্শী ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দৈনন্দিন কর্মসূচি শেষে শহরের বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে আড্ডা দিচ্ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নওগাঁয় নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীরা। ওই মুহূর্তে হঠাৎ করেই কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে সেখানে প্রবেশ করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এরপর ছাত্রনেতা আরমান হোসেনকে অতর্কিতভাবে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন আরমান। তাৎক্ষণিক তাকে ছুরিকাঘাতের চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা আরমানকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। ওই মুহূর্তে মেহেদী হাসান নামে আরেক শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। আহত অবস্থায় আরমান ও মেহেদিকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে নেয় শিক্ষার্থীরা। দুজনের মধ্যে মেহেদিকে জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হলেও অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় আরমানকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক।

আরও পড়ুনঃ  ৪০ বছর ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি, কে এই মুহাম্মদ আততুস ?

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একজন জানান, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর চাঁদাবাজিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সমর্থন চেয়ে আসছিল কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এ প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় দেশীয় অস্ত্র ও অগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আকস্মিক এ হামলা চালায় তারা। এ ঘটনায় জড়িত প্রত্যেককে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

হামলার শিক্ষার ছাত্রনেতা আরমান হোসেন বলেন, কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই ওরা (কিশোর গ্যাং) আমাকে মারধর শুরু করে। তারা আমার মাথাসহ পুরো শরীরে আঘাত করেছে। একপর্যায়ে স্কুলের পেছনে অন্ধকার একটা জায়গায় টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এতে বাধা দিলে পকেট থেকে ছুরি বের করে আমাকে হত্যার চেষ্টা চালায় তারা। ভাগ্যক্রমে বেঁচে ফিরলেও অভিযুক্তদের গডফাদাররা প্রতিনিয়ত আমাকে হুমকির ওপরে রেখেছে। বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

আরও পড়ুনঃ  বঙ্গবন্ধুকে জাতির জনক মনে করে না এ সরকার : উপদেষ্টা নাহিদ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক নেতা ফজলে রাব্বি বলেন, দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনে শিক্ষার্থীদের অবদানের কথা মাথায় রেখে হলেও প্রশাসনের উচিত সব সময় আমাদের পাশে দাঁড়ানো। অন্যায়কে প্রশ্রয় না দেওয়ায় আমাদের সহযোদ্ধা আহত হয়ে আজ হাসপাতালে ভর্তি। সেনাবাহিনীর তাৎক্ষণিক ভূমিকা রাখলেও থানা পুলিশ অভিযুক্তদের নিয়ে থানায় বসে সমঝোতা করতেই ব্যস্ত। যে যতই চেষ্টা করুক, হামলাকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারী প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনতে না পারলে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা দেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

আরও পড়ুনঃ  রমজানে কাবায় তারাবি পড়াবেন সাত ইমাম

নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি অপারেশন) আব্দুল আজিজ বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে সান্নিধ্য, হাসান ও আলামিন নামে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ