19 C
Dhaka
Saturday, February 22, 2025

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাইনিংয়ে ঝোল ঘন করতে ব্যবহার হয় চিড়া-পাউরুটি

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলে পঁচা-বাসি খাবার এবং চিড়া-পাউরুটি মিশিয়ে তরকারির ঘন ঝোল পরিবেশনের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১১ নভেম্বর) হলটির ডাইনিংয়ের রান্নাঘরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

এদিন ডাইনিংটির রান্নাঘরে ভেজানো চিড়া, আগেরদিনের ভাজা মাছ, শুঁটকি তরকারি ও মুরগির ঝোল দেখতে পান কিছু শিক্ষার্থী। পরে হাউজ টিউটর তারিফুল ইসলামকে জানালে ঘটনাস্থলে আসেন তিনি। সন্ধ্যায় হল প্রশাসন ডাইনিংয়ে গেলে আবার তরকারিতে চিড়ার উপস্থিতি পাওয়া যায়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে মানহীন খাবার পরিবেশন করে আসছে বর্তমান ডাইনিং পরিচালক। এর আগে হলের খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে যাবার অভিযোগও রয়েছে শিক্ষার্থীদের। এছাড়াও হরহামেশাই খাবারে কীটপতঙ্গ, বেচে যাওয়া খাবার কাঁচা মাছ মাংসের সাথে রাখা, বাসি খাবার নতুন খাবারের সাথে মিশিয়ে পুনরায় খাওয়ানোসহ নানান অভিযোগ ডাইনিং কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুনঃ  কুড়িগ্রামের সাবেক এমপি নাজমীন সুলতানা আটক

মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী অপূর্ব সূত্রধর বলেন, একদিকে তো অপরিষ্কার, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে রান্না তারপর আবার ঝোল ঘন করার জন্যে পাউরুটি, চিড়া মেশানো খুবই খারাপ কাজ। অনেক সময় খাবার পরিবেশন প্লেটের মাঝেও ময়লা পাওয়া যায় অর্থাৎ ডাইনিং এ খাবার রান্না থেকে পরিবেশন সবটাই নোংরাভাবে হয়ে থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়টির ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী রাব্বি তুষার বলেন, হলের ডাইনিং এ প্রতিদিনই বেঁচে যাওয়া খাবার কাঁচা মাছ-মাংসের সাথে রেখে দেয়া হয়। আমরা প্রায় ৭ জন একসাথে পেটের রোগে আক্রান্ত হই ডাইনিং এর খাবার খেয়ে। এছাড়া কীট ও পোকাতো খাবারের আরেক আইটেমই বলা চলে। আগের ডাইনিং এর থেকে এখন মান বাড়ার কথা কারণ ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছে। কিন্তু মান এখন আরও কমেছে।

আরও পড়ুনঃ  কনস্টেবল পদে চাকরি করেই ‘কোটিপতি’ জয়পুরহাটের মেহেদী

হাউজ টিউটর তারিফুল ইসলাম বলেন, সকালে শিক্ষার্থীরা মুটোফোনে জানালে আমি দ্রুতই ডাইনিংয়ে আসি। ডাইনিংয়ের পানিতে ভেজানো চিড়া, গতকালকের ভাজা মাছ, শুটকির তরকারি ও মুরগির ঝোল ছিল। এই চিড়া ঝোল গাঢ় করার জন্য ব্যবহার করে তারা। পরে বিষয়গুলো আমি প্রভোস্টকে জানাই।

এ ব্যাপারে ডাইনিং পরিচালক মো. নাজমুল হাসান জানায়, চিড়াটা খাওয়ার জিনিস। এটি বাজে জিনিসও না, বিষাক্ত জিনিসও না। আর চিড়া মেশানো হলে তরকারির স্বাদেরও কোনো পরিবর্তন হয় না। আর একদিন আগের একেবারে বাজে খাবারটা আমরা দেই না। যেটা চালানো যায়, সেটাই পরদিন ব্যবহার করি। আমায় শেষ সুযোগ দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে এমন কাজ আর করবো না।

আরও পড়ুনঃ  ‘১৬ বছর পর বাবা-ছেলের সঙ্গে নামাজ পড়তে পারছি, আনন্দ হচ্ছে’

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু হলের ডাইনিংয়ে তরকারির ঝোল ঘন করতে চিঁড়া ব্যবহার এবং বাসি খাবার পরিবেশনের ঘটনায় ডাইনিং পরিচালককে শেষবারের মতো সতর্ক করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাবুর্চিকে সার্বক্ষণিক তদারকির দায়িত্বও দেয়া হয়েছে। আবারও এ ধরনের অভিযোগ পেলে দ্রুততম সময়ে ডাইনিং পরিচালক পরিবর্তন করা হবে।

শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারের ডেপুটি চিফ মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা. আবুল খায়ের মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, খাবার যতোই পুষ্টিমান সম্পন্ন হোক, এক রাতের বেশি কখনো এক্সটেনশন করা যাবে না। এটা অবশ্যই স্বাস্থ্যঝুঁকি। আর ঝোলের সাথে চিড়া-পাউরুটি এমন রেসিপি আমি কখনো শুনিনি।

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ